আজকে আমরা ব্যবহারিক : কাপড়ের এয়ার পারমিয়্যাবিলিটি নির্ণয়করণ আলোচনা করবো। যা টেক্সটাইল টেস্টিং অ্যান্ড কোয়ালিটি কন্ট্রোল ৩ এর ব্যবহারিক অংশের অন্তর্গত।

ব্যবহারিক : কাপড়ের এয়ার পারমিয়্যাবিলিটি নির্ণয়করণ (Determine the air permeability of a fabric)
ভূমিকা ঃ
বিভিন্ন উদ্দেশ্য সাধনে কাপড়ের নির্মাণশৈলী বিভিন্ন। তবে কাপড়ের মধ্যে সুতার গঠনের কারণেই কাপড়ের অংশ ফাঁকা রয়ে যায় যাকে এয়ার স্পেস (Air space) বলা হয়। এ এয়ার স্পেসের পরিমাণ এবং অবস্থান কাপড়ের কিছু কিছু গুণাবলিকে প্রভাবিত করে। যেমন— গরমের অনুভূতি, বাতাস বা পানি প্রতিরোধ ক্ষমতা, শোধন ক্ষমতা ইত্যাদি কাপড়ের এ এয়ার স্পেসের উপর নির্ভর করে কাপড়ের বিভিন্ন রকম ব্যবহার হয়ে থাকে। এয়ার স্পেসের পরিমাণকে সাধারণত বায়ু প্রভেদ্যতা বা এয়ার পারমিয়্যাবিলিটি বলে।
উদ্দেশ্য ঃ
১। কাপড়ের এয়ার পারমিয়্যাবিলিটি নির্ণয় করা।
২। কাপড়ের গুণাগুণ নির্ণয় করা।
৩। ক্রেতার চাহিদা নিরূপণ করার জন্য।
শার্লি এয়ার পারমিয়্যাবিলিটি অ্যাপারেটাস (The shirley air permeability apparatus) :
শার্লি এয়ার পারমিয়্যাবিলিটি টেস্টার এ সাকশন পাম্প (A) এর সাহায্যে ল্যাবরেটরি হতে ৬৫±২% আপেক্ষিক আর্দ্রতায় এবং ২০°±২° সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রার বাতাস নমুনা কাপড় (s) এর মধ্য দিয়ে টানা হয় ।

এ বাতাস প্রবাহের হার বাইপাস (By pass) ভালভ (B) এর সিরিজ ভালভ (C) এর মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। কাপড়ের মধ্যে প্রবাহিত বাতাসের হার সমন্বয় করার জন্য একটি ড্রাফট গেজ (D) থাকে যাতে ০ থেকে ২৫ মিলিমিটার পানির দাগাঙ্কিত থাকে। যে সমস্ত কাপড়ের বাতাস প্রতিরোধক ক্ষমতা বেশি এবং সাকশন পাম্পের বাতাস অপর্যাপ্ত সেক্ষেত্রে বাইপাস ভালভ খুলে দেয়া হয় ফলে বাতাস সরাসরি পাম্পে প্রবেশ করে।
অল্প বাতাস প্রতিরোধ ক্ষমতা কাপড়ের বেলায় এ ভালভ বন্ধ রাখা হয় বা নিয়ন্ত্রিতভাবে ছাড়া হয়। যন্ত্রে বাতাসের গতিবেগে কোন গরমিল থাকলে তা করার জন্য একটি রিজারভার (E) থাকে। এ যন্ত্রে চারটি রোটামিটার (Rotameter) R1, R2, R3 3R, যা আদর্শ চাপে তাপমাত্রায় (৭৬০ মিমি পারদের চাপ ও ২৭° সেগ্রে তাপমাত্রা) প্রতি সেকেন্ড বাতাস প্রবাহের হার ঘনসেন্টিমিটার সরাসরি নির্দেশ করে। রোটামিটার চারটি নিম্নোক্ত পরিসরে কাজ করে।

R1 = ০.০৫ থেকে ০.৫ ঘন সেমি/সেকেন্ড
R2 = ০.৫ থেকে ৩.৫ ঘন সেমি/সেকেন্ড
R3 = ৩.০ থেকে ৩৫.০ ঘন সেমি/সেকেন্ড
R4 = ৩০.০ থেকে ৩৫০.০ ঘন সেমি/সেকেন্ড
একটি নির্দিষ্ট নমুনার জন্য একটিমাত্র রোটামিটার কাজ করে বাকি তিনটি নিয়ে লক্ষ রাখা হয়।

যে কাপড়ের এয়ার পারমিয়্যাবিলিটি নির্ণয় করতে হবে সেখানে থেকে ৫.০৭ বর্গসেন্টিমিটার মাপের একটি ক্যাম্প। (G) তে লাগানো হয় যাতে ২.৫৪ সেমি বা ১ ইঞ্চি ব্যাসের কাপড়ের বৃত্ত পাওয়া যায়। ড্রাফট গেজের সাহায্যে বাতাস প্রবাহের হার সমন্বয় করে প্রথম রোটামিটার R4 খুলে দিয়ে অন্যগুলো বন্ধ রাখা হয়। যদি বাতাস প্রবাহের হার ঘন সেমি এর কম হয় তবে R4 বন্ধ করে R3 খুলে দেয়া হয়। এভাবে উপযুক্ত বায়ুপ্রবাহের হার না পাওয়া গেলে রোটামিটার পরিবর্তন করা হয়। এর কাঙ্ক্ষিত প্রবাহের হার পাওয়া গেলে তা বোটামিটারের গা থেকে সরাসরি পাওয়া যায়। কাপড়ের মধ্য দিয়ে অযাচিত চাপে চাপ নেমে যাওয়ার কারণে ড্রাফট গেজ নষ্ট হয়ে যেতে পারে, সেজন্য একটি নিরাপদ জলভ (F) ব্যবহার করা হয়।
রোটামিটারের পাঠ থেকে নিম্নলিখিত সূত্রের সাহায্যে কাপড়ের এয়ার পারমিয়্যাসিলিটি ও এয়ার- রেজিস্ট্যান্স হিসাব করা যায়।
এয়ার পারমিয়্যাবিলিটি = বাতাস প্রবাহের গড় হার/৫.০৭ ঘন সেমি/সেকেন্ড বর্গ সেমি।
এয়ার রেজিস্ট্যান্স = ৫.০৭/ বাতাস প্রবাহের গড় হার সেকেন্ড
সাবধানতা :
১. সঠিক নমুনা নির্বাচন করতে হবে।
২. ক্ল্যাম্পের ভিতর নমুনাকে সঠিকভাবে লাগাতে হবে।
৩. রোটামিটারগুলোর প্রেসারগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
৪. ফলাফল নির্ণয়ের ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।

ব্যবহারিক সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ মৌখিক প্রশ্নোত্তর
১। পারমিয়্যাবিলিটি বা প্রভেদ্যতা বলতে কী বুঝ?
উত্তর: একটি কাপড়ের পারমিয়্যাবিলিটি বুঝায়
২। পারমিয়্যাবিলিটি কত প্রকার ও কী কী?
উত্তর: পারমিয়্যাবিলিটি দুই প্রকার, যথা-
১। এয়ার পারমিয়্যাবিলিটি,
২। ওয়াটার পারমিয়্যাবিলিটি।
৩। এয়ার স্পেস কী?
উত্তর: কাপড়ের মধ্যে সুতার গঠনের কারণেই একটি অংশ ফাঁকা থাকে, তাকে এয়ার স্পেস বলে।
৪. রোটামিটারগুলোর তাপমাত্রা ও চাপের পরিমাণ কত?
উত্তর: ৭৬০ মিমি পারদের চাপ ও ২৭
৫। এয়ার পরোসিটির শতকরা হার কী?
উত্তর: এয়ার পরোসিটির শতকরা হার = কাপড়ের এয়ার স্পেসের মোট আয়তন/ কাপড়ের মোট আয়তন x ১০০
আরও দেখুনঃ