আজকে আমরা ব্যবহারিক : বাস্টিং টেস্টের মাধ্যমে কাপড়ের শক্তি নির্ণয়করণ আলোচনা করবো। যা টেক্সটাইল টেস্টিং অ্যান্ড কোয়ালিটি কন্ট্রোল ৩ এর ব্যবহারিক অংশের অন্তর্গত।

ব্যবহারিক : বাস্টিং টেস্টের মাধ্যমে কাপড়ের শক্তি নির্ণয়করণ (Determine the strength of fabric sample by 3. Bursting test)
ভূমিকা :
ভিন্ন ভিন্ন কাজে ব্যবহারের জন্য তৈরিকৃত কাপড়ের বৈশিষ্ট্য ভিন্ন ভিন্ন। কাপড় পরিধেয় হতে শুরু করে নভোচারীদের ব্যবহারের জন্যও তৈরি করা যায়। তাই ভিন্ন ভিন্ন ব্যবহারের জন্য কাপড়ের শক্তিও ভিন্ন ভিন্ন প্রয়োজন। এমনকি পরিধেয় পোশাকের শক্তিও প্রকারভেদে বিভিন্ন রকম হয়। তাই প্রস্তুতকৃত কাপড়টি যে বিশেষ উদ্দেশ্যের জন্য। তৈরি করা হয়েছে সে উদ্দেশ্য সাধনের জন্য উপযুক্ত শক্তি আছে কি না তা পরীক্ষা করা একান্ত প্রয়োজন।
উদ্দেশ্য :
সাধারণত নিম্নলিখিত উদ্দেশ্য সাধনের জন্য কাপড়ের শক্তি নির্ণয় করা যায় :
১। ফরমায়েশকৃত কাপড়ের সুনির্দিষ্ট গুণাগুণের সাথে মিল বা অমিল অনুসন্ধান।
২। শক্তি প্রয়োগে কাপড়ের গাঠনিক পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ করা।
৩। বিভিন্ন আবহাওয়ায় কাপড় ধোয়ার ফলে এর কী কী ভৌত ও রাসায়নিক পরিবর্তন হয় তা লক্ষ করা।
৪। পরবর্তীতে কাপড় ব্যবহারের ফলে সম্ভাব্য কী কী অসুবিধা হতে পারে তা বের করা
৫। কেন উপযুক্ত শক্তি পাওয়া গেল না সে ব্যাপারে অনুসন্ধান চালানো।
৬। ক্রেতার কোন অভিযোগ থাকলে তা নিরূপণ করা।
৭। বিশেষ উদ্দেশ্যে ব্যবহারের জন্য কী কী পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন তা বের করা।

কাপড়ের শক্তি নির্ণয়ের বিভিন্ন পদ্ধতি
পরীক্ষণীয় কাপড়ের ধরন এবং ব্যবহৃত যন্ত্রের ধরনের উপর নির্ভর করে বিভিন্ন পদ্ধতিতে কাপড়ের শক্তি নির্ণয় করা যায় যেমন-
১। টেনসাইল স্ট্রেংথ পরীক্ষা (Tensile strength test) :
এক্ষেত্রে কাপড়ের টানা ও পড়েনের দিকে কাপড়ের ব্রেকিং স্টেংথ (Breaking strength) বা ছিড়ে যাওয়ার শক্তি নির্ণয় করা যায়। যা তিনভাবে বের করা যায়, যেমন-
(ক) স্লিপ মেথড (Strip method)
এটা আবার দুই প্রকার, যেমন-
(1) রেডেলড স্লিপ মেথড (Revelled strip method)
(ii) কাট স্ট্রিপ মেথড (Cut strip method)
(খ) গ্রাব টেস্ট (Grab test)
(গ) মডিফাইড গ্রাব টেস্ট (Modified grab test)
২। টিয়ারিং টেস্ট (Tearing test) এটা দুপ্রকার, যেমন-
(ক) ট্রাপিজয়েড টিয়ার টেস্ট (Trapezoid tear test)
(খ) টাং টিয়ার টেস্ট (Tongue tear test)
৩। বাস্টিং টেস্ট (Bursting test)

৩। বাস্টিং টেস্ট (Bursting test)
বাস্ট অর্থ ফেটে যাওয়া। এ পরীক্ষণের মাধ্যমে মূলত কাপড়ের ফেটে যাওয়ার শক্তিই নির্ণয় করা হয়। এ পদ্ধতি মূলত কাগজ শিল্পে ব্যবহৃত হলেও বর্তমানে কাপড়ের শক্তি নির্ণয়ের ক্ষেত্রেও ব্যবহৃত হচ্ছে। কিছু কিছু কাপড় যেমন নিটেড কাপড় বা ফেটেও কাপড় যা ট্রিপ টেস্টের সাহায্যে পরীক্ষা করা অনুি সেক্ষেত্রে উক্ত কাপড়ের শক্তি নির্ণয়ের জন্য বার্সিং টেস্ট সুবিধাজনক এ সমস্ত কাপড়ে একদিকে শক্তি হয়োগ করলে তা বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে যায়। এ জন্য এ পদ্ধতিতে কাপড়ের শক্তি নির্ণয়ের জন্য নাহি টেন সুবিধাজনক এম একদিকে শক্তি প্রয়োগ করলে তা বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে যায়। এ জন্য এ পদ্ধতিতে কাপড়ের উপর বিভিন্ন নিে directionally) এর সাথে শক্তি প্রয়োগ করা হয়।

কাপড়ের বাস্টিং শক্তি পরীক্ষার জন্য দু ধরনের মেশিন ব্যবহার করা হয়।
১. যান্ত্রিক ধরনের বাস্টিং ট্রেপে টেস্টার (Mechanical type bursting strength tester)
২. হাইড্রলিক ধরনের বার্সিং স্ট্রেংথ টেস্টার (Hydraulic pressure type bursting strength testers)
নিচে হাইড্রলিক প্রেসার টাইপ বার্সিং স্ট্রেংথ টেস্টার পদ্ধতিতে কাপড়ের শক্তি নির্ণয়ের পদ্ধতি বর্ণনা করা হলো :

A = কাপড়,
B= ক্ল্যাম্প,
C = পাতলা রাবারের পর্দা,
D= তরল ভর্তি পাত্র,
E = ইন্ডিকেটর ডায়াল
কাপড়ের বাস্টিং শক্তি নির্ণয়ের জন্য কাপড়ের নমুনা নিয়ে পাতলা রাবারের পর্দার উপর ক্যাম্পের সাহায্যে আটকানো হয়। তারপর পাম্পের সাহায্যে পাত্রের পানি বা তৈল চাপ প্রয়োগ করা হয়, ফলে রাবারের পদ্ধতিটি বেলুনের মত আস্তে আস্তে প্রসারিত হয়ে উপরের দিকে ফুলে উঠতে থাকে এবং সে সাথে কাপড়টিও ফুলতে থাকে। এভাবে যতক্ষণ পর্যন্ত কাপড়টি ফেটে না যায় ততক্ষণ পর্যন্ত চাপ বৃদ্ধি করা হয়। যে চাপে কাপড়টি ফেটে যায় তা তাৎক্ষণিকভাবে যন্ত্রের সাথে লাগানো ইন্ডিকেটর ডায়াল থেকে পাওয়া যায়।
সাবধানতা :
১. সঠিক নমুনা নির্বাচন করতে হবে।
২. নমুনাকে ক্যাম্পের মধ্যে ভালোভাবে আটকাতে হবে।
৩. বাস্টিং টেস্ট করার সময় প্রেসার ঠিক আছে কি না সেটা ভালোভাবে খেয়াল রাখতে হবে।
ব্যবহারিক সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ মৌখিক প্রশ্নোত্তর
১। স্ট্রিপ টেস্ট কী?
উত্তর : স্ট্রিপ অর্থ সরু ফালি, কাপড়ের ফালি বা টুকরা পরীক্ষা করা হয় বলে এ পরীক্ষার নাম স্ট্রিপ টেস্ট।
২। কোন কাপড়ের জন্য বার্স্টিং টেস্ট করা হয়?
উত্তর : প্যারাসুট কাপড়, ফিল্টার ক্লথ এবং নিটেড কাপড়।
৩। বার্স্ট শব্দের অর্থ কী?
উত্তরঃ ফেটে যাওয়া ।
৪। বাস্টিং শক্তি পরীক্ষার জন্য কয় ধরনের মেশিন রয়েছে ও কী কী?
উত্তরঃ দুই ধরনের মেশিন রয়েছে, যথা-
১। যান্ত্রিক
২। হাইড্রলিক ।
৫। গ্রাব টেস্ট কোথায় বেশি ব্যবহৃত হয়?
উত্তর : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে।
আরও দেখুনঃ