আজকে আমরা ব্যবহারিক : কাপড়ের ফার্স্টনেস পরিমাপ নির্ণয়করণ আলোচনা করবো। যা টেক্সটাইল টেস্টিং অ্যান্ড কোয়ালিটি কন্ট্রোল ৩ এর ব্যবহারিক অংশের অন্তর্গত।

ব্যবহারিক : কাপড়ের ফার্স্টনেস পরিমাপ নির্ণয়করণ (Determine the fastness properties of a fabric)
ভূমিকা :
কোন টেক্সটাইল প্রব্যের উপর একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তাপ, আলো, ঘর্ষণ, ধৌতকরণ ইতान করলে উক্ত দ্রব্য কী পরিমাণ তার আসল গুণাবলিকে বিকৃত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে পারে, তাকেই টেক্সটাইল দ্রব্যের ফাস্টনেস বলে আবার বিভিন্ন অবস্থায় রঙিন বা ছাপা কাপড়ের রং অবিকৃত থাকাকেই কালার ফাস্টনেস বলে। তবে টেক্সটাইল পণ্যসামীর ফাস্টনেস সাধারণত ভোক্তার চাহিদা ও ইচ্ছার উপর নির্ভর করে।
নমুনা প্রস্তুতকরণ :
ফাইবার, সুতা বা কাপড় এ তিন প্রকার দ্রব্যেরই কালার ফার্স্টনেস পরীক্ষা করা যায়। কাপড়ের ১০ সেমি x ৪ সেমি মাপের কাপড় নমুনা হিসেবে নেয়া হয়। অতঃপর নমুনাটি দুটি রংবিহীন কাপড়ের মাঝখানে রাখা হয় যার মধ্যে একটি কটনের অপরটি উলের। এ কাপড় দুটিও একই মাপের হয়ে থাকে। এ কাপড় দুটি মধ্যম ওজনের, প্রেইন উইভের এবং সর্বপ্রকার ফিনিশিং ও রাসায়নিক দ্রব্যমুক্ত হতে হবে। তারপর পরীক্ষার ধরনের উপর নির্ভর করে নমুনাসহ রাবিহীন কাপড়ের পার্শ্ব সেলাই করা হয়। তবে এ ধরনের পরীক্ষা শুধুমাত্র ভিজা পরীক্ষার জন্যেই হয়ে থাকে।

বিভিন্ন ধরনের ফাস্টনেস গুণাবলির পরিমাপ ঃ
ওয়াশিং ফাস্টনেস :
রঙিন বা ছাপা কাপড়ের ওয়াশিং ফাস্টনেস নির্ণয় করার জন্য উপরে বর্ণিত নিয়মে তৈরি করে সংযুক্ত নমুনাটির সবপাশ সেলাই করা থাকে। বিশুদ্ধ পানির প্রতি লিটারে ৫ গ্রাম সাবান নিয়ে বিকারক তৈরি করা হয়। দ্রব্য ও প্রাবকের অনুপাত ১৫০ থাকে সংযুক্ত নমুনাটি ৪০° ২° সে তাপমাত্রায় ৩০ মিনিট নাড়াচাড়া করা হয়। তারপর নমুনাটি দ্রবণ থেকে তুলে ঠাণ্ডা পানিতে ধোয়া হয়। তারপর প্রবহমান পানির নিচে ১০ মিনিট কাল ধোয়া হয়।

পারস্পিরেশন ফাস্টনেস :
রঙিন কাপড়ের পারস্পিরেশন পরীক্ষার জন্য একটি অম্লীয় প্রবণ যথা প্রতি লিটারে ২. গ্রাম সোডিয়াম ক্লোরাইড এবং ০.৭৫ গ্রাম ইউরিয়া নিয়ে তৈরি এবং এর pH এসিটিক এসিড দ্বারা ৫.৬ রাখা হয়। অপরটি ক্ষারীয় প্রবণ প্রতি লিটারে ৩ গ্রাম সোডিয়াম ক্লোরাইড দিয়ে তৈরি এবং এর pH সোডিয়াম বাই কার্বনেট দিয়ে ৭.২ রাখা হয়।
যে কাপড়ের পরীক্ষা করা হবে তার ৫ সেমি x ৪ সেমি এর দুটি নমুনা কাপড় একই মাপের রংবিহীন কটন কাপড় ও উলেন কাপড়ের মধ্যে রেখে শুধু ৫ সেমি এর দিকে সেলাই করে একটিকে অম্লীয় দ্রবণে ও অপরটিকে ক্ষারীয় দ্রবণে ৩০ মিনিট ভিজানো হয়। সেখানে দ্রব্য ও ধাবকের অনুপাত ১৫০ থাকে। এরপর দ্রবণ থেকে নমুনা বের করে দুটি কাচের পাতের মধ্যে ৪.৫ kg চাপে রেখে পারস্পিরো মিটার ঢুকানো হয়। এ যন্ত্রটিকে এয়ার ওভেন এ ৩৭° ২° সে. তাপমাত্রার ৪ ঘন্টা রাখার পর সেলাই খুলে নমুনাকে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় শুকানো হয়। এরপর আদর্শ নমুনার সাথে তুলনা করে মান নির্ধারণ করা হয়।
|
Numerical assessment |
Theoretical assessment |
|
5 |
very good |
|
4 |
good |
|
3 |
fair |
|
2 |
moderate |
|
1 |
poor |
|
0 |
very poor |
লাইট ফাস্টনেস
রঙিন কাপড়ের লাইট ফাস্টনেস নির্ণয় করার জন্য নমুনা কাপড়কে ২৪ ঘণ্টা সরাসরি উন্মুক্ত অবস্থায় রাখা হয়। অতঃপর মূল আদর্শ নমুনার সাথে পরীক্ষিত নমুনার পরিবর্তন লক্ষ করে তুলনা করে কাপড়ের মান নিম্নোক্তভাবে নির্ধারণ করা হয়।
|
Numerical assessment |
Theoretical assessment |
|
1 |
very low |
|
2 |
poor |
|
3 |
moderately poor |
|
4 |
moderate |
|
5 |
good moderate |
|
6 |
fair |
|
7 |
good |
|
8 |
very good |
সাবধানতা
১। সঠিক নমুনা নির্বাচন করতে হবে।
২। দ্রবণের মিশ্রণের পরিমাণ ঠিক আছে কি না সেটা লক্ষ রাখতে হবে
৩। ফলাফল নির্ণয়ের ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।

ব্যবহারিক সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ মৌখিক প্রশ্নোত্তর
১। ফাস্টনেস কাকে বলে?
উত্তর : কোন টেক্সটাইল দ্রব্যের উপর একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তাপ, আলো, ঘর্ষণ, ধৌতকরণ ইত্যাদি দ্বারা ক্রিয়া করালে উক্ত দ্রব্য কী পরিমাণ তার আসল গুণাবলিকে বিকৃত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে পারে, তাকেই টেক্সটাইল দ্রব্যের ফাস্টনেস বলে।
২। কালার ফাস্টনেস কী?
উত্তর : বিভিন্ন অবস্থার রঙিন বা ছাপা কাপড়ের রং অবিকৃত থাকাকেই কালার ফাস্টনেস বলে
৩। ওয়াশিং ফাস্টনেস দ্রব্য ও দ্রাবকের অনুপাত কত?
উত্তর : ১ঃ৫০
৪। লাইট ফাস্টনেস পরিমাপে নমুনাকে কত ঘন্টা সূর্যালোকে উন্মুক্ত রাখা হয়?
উত্তর : ২৪ ঘন্টা
৫। কাপড়ে কী কী ফাস্টনেস পরিমাপ করা হয়।
উত্তর : ১। লাইট ফাস্টনেস
২। ওয়াশিং ফাস্টনেস
৩। রাভিং ফাস্টনেস।
আরও দেখুনঃ